প্রতিশ্রুত মসীহ্ ও ইমাম মাহ্দী (আ:) এর সংক্ষিপ্ত জীবনি
প্রতিশ্রুত মসীহ্ ও ইমাম মাহ্দী (আঃ)। (ভিডিও প্রামাণ্যচিত্র)
আহমদীয়া মুসলিম জামাত, ইসলামের মধ্যে একটি গতিশীল, আন্তর্জাতিকভাবে দ্রুত বর্ধমান ইসলামের পুনরুজ্জীবনের আন্দোলন।
আহমদীয়া মুসলিম জামাত ইসলামের একটি গতিশীল, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে দ্রুত বর্ধমান ইসলামের পুনরুজ্জীবনের আন্দোলন। ১৮৮৯ সালে প্রবর্তিত হয়ে এই জামাত ২১০ টি দেশে ইতিমধ্যেই প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। প্রতি বৎসর বিশ্বের সর্বত্র লক্ষ লক্ষ মানুষ আহমদীয়াত তথা ইসলামের পুনরুজ্জীবনের এই মহতী আন্দোলনে যোগদান করছে। আহমাদীয়া মুসলিম জামাত বিশ্বাস করে বহু প্রতীক্ষিত ইমাম মাহ্দী ও মসীহ্ মওউদ (আ.) আবির্ভূত হয়েছেন। তিনি হচ্ছেন, কাদিয়ানের হযরত মির্যা গোলাম আহমদ (আ.)। ১৮৩৫ সালে তিনি জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯০৮ সালে মৃত্যুবরন করেন। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী ঐশী নির্দেশনা মোতাবেক তিনি রূপকভাবে স্বয়ং প্রতিশ্রুত ঈসা ও ইমাম মাহ্দী হওয়ার দাবি করেন। তাঁর আগমনের উদ্দেশ্য হচ্ছে ধর্মীয় যুদ্ধ এবং রক্তপাত বন্ধ করা, সমাজে নৈতিকতা, ন্যায় বিচার ও শান্তি প্রতিষ্ঠিত করা। হযরত আহমদ (আ.)-এর মাধ্যমে ইসলামের পুনর্জাগরণের এক অপ্রতিরোদ্ধ আন্দোলন শুরু হয়েছে। গোঁড়া ও ভ্রান্ত ইসলামের চর্চা ও ব্যাখ্যা সমূহের মূল উৎপাটন করে তিনি ইসলামের সত্য ও অপরিহার্য শিক্ষাসমুহকে পুনরায় পৃথিবীতে অত্যন্ত দৃঢ়তার সাথে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তিনি পৃথিবীর সকল ধর্মমতকে সত্যিকার ইসলামের ছায়াতলে সমবেত করে হযরত ইব্রাহীম (আ.), ঈসা (আ.), মূসা (আ.), কৃষ্ণ (আ:), বৌদ্ধ (আ.), কনফুসিয়াস (আ.), গুরু নানক (আ.), লাও তজু (আ.) এবং তাঁদের জোরোয়াস্ত্রে (আ:) (বুঝিনাই) শিক্ষাসমূহকে সুরক্ষিত করেছেন। আহমদীয়া মুসলিম জামাত একমাত্র নেতৃস্থানীয় ইসলামী সংগঠন যেটি যে কোনো ধরণের সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপকে প্রত্যাখ্যান করে। আজ থেকে ১০০ বৎসর পূর্বে হযরত আহমদ (আ.) অত্যন্ত জোরালোভাবে ঘোষণা করেন যে, আক্রমনাত্মক তরবারির জিহাদের ইসলামে কোনো স্থান নাই। বরং তিনি তাঁর অনুসারীদেরকে রক্তপাতহীন শান্তিপূর্ণভাবে বুদ্ধিবৃত্তিক কলমের যুদ্ধের মাধ্যমে ইসলামকে সুরক্ষিত করতে শিখিয়েছেন। তিনি ৮০ টির অধিক বই-পুস্তক, দশ হাজারের বেশি তবলীগি চিঠি-পত্র লিখেছেন, শতাধিক বক্তৃতা প্রদান করেছেন এবং অনেক ধর্মীয় বিতর্কসভা করেছেন। এক্ষেত্রে মুসলিম বিশ্ব থেকে আহমদীয়া মুসলিম জামাতকে চরম বিরোধিতার সমুক্ষীন হতে হচ্ছে। আহমদীয়া মুসলিম জামাত পৃথক ধর্ম ও রাষ্ট্র ব্যবস্থার কথা অনুমোদন করে না। হযরত আহমদ (আ.) তাঁর অনুসারীদেরকে একজন পবিত্রচেতা ব্যক্তি ও সুনাগরিক হয়ে ধর্ম ও রাষ্টের পবিত্রতা সংরক্ষণ করতে বলেছেন। পবিত্র কুরআনের ভুল ব্যাখ্যা এবং ইসলামিক আইনের ভুল প্রয়োগের ব্যাপারে তিনি বিশ্বকে সতর্ক করেছেন। আল্লাহর সৃষ্টির সম্মান রক্ষায় তিনি সর্বদা সরব ছিলেন। আজ আহমদীয়া মুসলিম জামাত আন্তর্জাতিক মানবধিকার রক্ষার ব্যাপারে খুবই সরব, সকল সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও ধর্মীয়-গোষ্ঠীর পক্ষে কথা বলছে। নারী শিক্ষা ও নারীর ক্ষমতায়নে আহমদীয়া মুসলিম জামাত এর সাফল্য অসাধারণ। এই জামাতের সদস্যরা শিক্ষিত, মার্জিত, শান্তিপ্রিয়, আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ও দেশের উন্নয়নে সর্বদাই অগ্রগামী। পৃথিবীর সকল ইসলামী সংগঠনের মধ্যে একমাত্র আহমদীয়া মুসলিম জামাতে একজন কেন্দ্রীয় আধ্যাত্মিক নেতা আছেন। হযরত আহমদ (আ.) তাঁর অনুসারীদেরকে খিলাফত ব্যবস্থা প্রবর্তনের মাধ্যমে ইসলাম ধর্মকে সুরক্ষিত করা হবে, একথা বলে গিয়াছেন। আহমদীয়া মুসলিম জামাত বিশ্বাস করে, মানবজাতির একাত্মতা এবং ইসলামের সত্যিকার মূল্যবোধ একমাত্র ঐশী খিলাফতের মাধ্যমেই প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। ১৯০৮ সালে হযরত আহমদ (আ.)-এর তিরোধানের পর বর্তমানে পঞ্চম খিলাফতকাল চলছে। আহমদীয়া মুসলিম জামাতের পঞ্চম এবং বর্তমান খলীফা হচ্ছেন, হযরত মির্যা মসরূর আহমদ (আই.) | তিনি বর্তমানে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন। ঐশী খিলাফতের নেতৃত্বে আহমদীয়া মুসলিম জামাত বিশ্বব্যাপী ১৫০০০ এর ও অধিক মসজিদ, ৫০০’র বেশি স্কুল ও ৩০টির অধিক হাসপাতাল তৈরী করেছে। এই জামাত ৭৫টিরও বেশি ভাষায় পবিত্র কুরআনের অনুবাদ করেছে। ‘মুসলিম টেলিভশন আহমদীয়া’ অর্থাৎ MTAস্যাটেলাইট চ্যানেল www.mta.tv , ইন্টারনেটে www.alislam.org এবং প্রিন্ট media ইসলাম ইন্টারন্যাশনাল পাবলিকেশনের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী দিবারাত্র ইসলামের শান্তিপূর্ণ ও সহনশীলতার শিক্ষা প্রচার ও প্রসার করে যাচ্ছে। এছাড়া এর হিউম্যানিটি ফার্স্ট সংগঠনটি বিশ্বের সকল প্রান্তে প্রাকৃতিক দুর্যোগে ত্রাণ তৎপরতা, ফুড ব্যাঙ্ক, চিকিৎসা ও শিক্ষা সেবা, আফ্রিকার প্রত্যন্ত অঞ্চলে সুপেয় পানী সরবরাহ সহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক ও সামাজিক কার্যকমে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। www.humanityfirst.ca এই ঠিকানায় এর বিস্তারিত কার্যকম বর্ণিত আছে।